Month: November 2025
খণ্ডরূই রাধাবল্লভ মন্দির Khandarui Radhaballav Temple
জীর্ণ মন্দিরের জার্নাল– রাধাবল্লভ মন্দির, খণ্ডরূইগড় (দাঁতন— ২) চিন্ময় দাশ আইন–ই–আকবরী‘তে যাকে ‘তরকোল মহাল‘ নামে উল্লেখ পাই, সেটি হল তুর্কাচৌর পরগণা। মেদিনীপুর জেলার দক্ষিণের এলাকায় অবস্থান সেটির। ষোড়শ শতকের একেবারে প্রথম দিকের ঘটনা। দক্ষিণ দেশের তেলেঙ্গী জাতীয় এক রাজা সেখানে রাজত্ব করতেন। রাজধানী ছিল খণ্ডরূইগড়। করদ রাজা হয়েও, একবার কলিঙ্গরাজকে রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। রাজা দেবরাজ তখন কলিঙ্গের অধিপতি। বিদ্রোহী রাজাকে দমন করবার জন্য, নিজের বাহিনীর এক সেনাপতি কৃষ্ণদাস মহাপাত্রকে দায়িত্ব দিয়ে তুর্কায় পাঠিয়ে দেন। এক দিন, দু‘দিন, তিন দিন কেটে যায়, প্রবল যুদ্ধ করেও তেলেঙ্গীরাজাকে হারাতে পারছেন না কৃষ্ণদাস। রহস্য ভেদ হল রাজপুরোহিতের মুখ থেকে শুনে। রাজবাড়িতে আছেন কুলদেবী ভাগ্যেশ্বরী। তাঁর কৃপা না হলে, যুদ্ধজয় সুদূর পরাহত। রাতভর দেবীর আরাধনা করলেন কৃষ্ণদাস। মন্দির থেকে দেবীর খড়্গ সংগ্রহ করলেন। পরদিন যুদ্ধজয় হল সহজেই। বাহিনী নিয়ে ফিরে এলেন পুরী। ভরা দরবারে দেবরাজের পায়ের কাছে প্রণামী নামিয়ে দিলেন সেনাপতি। ঢাকনা তুলতে নৈবেদ্য প্রকট হল— বিদ্রোহী রাজার রক্তমাখা কাটা মুন্ড। দরবার ফেটে পড়ল উল্লাসে। কৃষ্ণদাসকে উপযুক্ত পুরস্কারই দিয়েছিলেন পুরীরাজ। তুর্কাচৌর পরগণার জমিদারী সনন্দ দিয়ে খণ্ডরূই পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে। সেনাপতি থেকে রাজা হয়ে গিয়েছিলেন কৃষ্ণদাস। গজেন্দ্র বংশের সন্তান তিনি, নতুন পদবি নিলেন— সিংহ গজেন্দ্র মহাপাত্র। মেদিনীপুর জেলায় নতুন এক রাজবংশের পত্তন হল সেদিন থেকে। ষোড়শ শতকের প্রথম দিকের ঘটনা এটি। কৃষ্ণদাসের কয়েক পুরুষ পরের জমিদার ছিলেন লালবিহারী সিংহগজেন্দ্র মহাপাত্র। তাঁর প্রপৌত্র গঙ্গানারায়ণের পুত্র পঞ্চানন সিপাহী বিদ্রোহের সময় ইংরেজ শক্তিকে বিশেষ সাহায্য করেছিলেন। সেই হিসাবে, ষোড়শ শতকের সাথে কৃষ্ণদাসের হিসাবটি সামঞ্জস্য পূর্ণ। খণ্ডরূই রাজবাড়িতে তেলেঙ্গী রাজার ভাগ্যেশ্বরী দেবীর পূজা বহাল রেখেছিলেন কৃষ্ণদাস। দেবী আজও পূজিত হন। পরে পরে একটি শিবমন্দির এবং একটি দূর্গা দালানও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এই পরিবারে। কিন্তু চৈতন্য দেবের গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাব শুরু হয়েছে তখন। এই পরিবারেও কৃষ্ণ আরাধনার সূচনা করা হয়। ‘ রাধাবল্লভ ‘ নামে রাধা–কৃষ্ণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় নতুন করে। রাধাবল্লভের জন্য মন্দিরটি গড়া হয়েছিল শ‘ দুই বছর পরে। পঞ্চাননের পিতা গঙ্গানারায়ণ কিংবা পিতামহ যশোদানন্দনের সময়ে নির্মিত হয়ে থাকবে মন্দিরটি। বিশাল আকারের এই মন্দির চারটি সৌধের গুচ্ছ। একেবারে পিছনে একটি চালামন্দির, আট–চালা রীতির। এটিতেই দেবতার আসন, গর্ভগৃহে। গর্ভগৃহের সামনে আরও একটি চার–চালা মন্দির, সেটি জগমোহন। এই দুটি সৌধের পরিমাপ— দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩২ ফুট, প্রস্থ সওয়া ২৬ ফুট। এই দুইয়ের মাঝখানে ২ ফুট বিস্তারের একটি অন্তরাল। একটি নাটমন্দির ছিল জগমোহনের সামনে। এই সৌধের চিহ্নটুকুও আজ মুছে যেতে বসেছে যেন। তার আকার আরো বিশাল। পরিমাপ— দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩৭ ফুট, প্রস্থ সওয়া ১৯ ফুট। তিনটিরই মাথার অংশ সম্পূর্ণ বিনষ্ট। উচ্চতা মাপা যায় না। তবে পুরাবিদ তারাপদ সাঁতরা বলে গিয়েছেন— পিছনের সৌধ দুটির উচ্চতা ছিল ২৩ ফুট, নাটমন্দির ছিল ২০ ফুট উঁচু। মন্দিরের তিন দিক জুড়ে তিন খিলানের দ্বারপথ সহ টানা অলিন্দ ছিল। পশ্চিমের অংশটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। থামের চিহ্নগুলি দেখা যায় কেবল। জীর্ণ দশা সিলিংগুলিরও। গর্ভগৃহে দুটি পাশখিলানের মাথায় আটটি অর্ধখিলান, সেগুলির মাথায় গম্বুজ স্থাপিত। জগমোহনে চার দেওয়ালে চারটি অর্ধখিলান। টানা–খিলান হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণের অলিন্দে। অলংকরণের প্রায় কিছুই আর অবশিষ্ট নাই এই মন্দিরে। তারাপদ সাঁতরার বিবরণে পাওয়া যায়, পাদপীঠের উপরের অংশ, স্তম্ভগুলির নিচের অংশেও টেরাকোটা ফলক ছিল একসময়। ফলকের মোটিফ— ‘শিকার–দৃশ্য, মিথুন–মূর্তি, নৃত্যরত নটী প্রভৃতি মূর্তি ‘। সেসকলের অধিকাংশই বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেবল উত্তরের অলিন্দের দেওয়ালে কয়েকটি জীর্ণ মূর্তি টিকে আছে কোনও রকমে। দক্ষিণের অলিন্দটি বর্তমানে সম্পূর্ণ অগম্য। তবে, সেবাইতপরিবারথেকেজানাগিয়েছে, তারদেওয়ালেওটেরাকোটাঅলংকরণছিল। রাধাবল্লভেরএইমন্দিরবহুকালপরিত্যক্ত।পরিত্যক্তহয়েছেপিছনেরবিশালদুর্গাদালানটিও।কুন্ডপুস্করিণীরচারপাড়েছিলপৃথকচারটিবাঁধানোঘাট— রাধাবল্লভ, ভাগ্যেশ্বরী, দূর্গাআরশিবচারদেবতারজন্য।চারটিঘাটেরকঙ্কালগুলিকোনওরকমেটিকেআছেকিছুকিছু।জমিদারীউচ্ছেদআরগতসাতদশকেররাজনৈতিকডামাডোলএইমহাপতনেরকুশীলব। সাক্ষাৎকার : ২০১০সালে– সর্বশ্রীদিলীপসিংহগজেন্দ্রমহাপাত্র, ইন্দ্রজিৎসিংহগজেন্দ্রমহাপাত্র— মেদিনীপুরশহর।সুজিতসিংহগজেন্দ্রমহাপাত্র, গৌতমসিংহগজেন্দ্রমহাপাত্র, সত্যেন্দ্রনাথদাসগুপ্ত— খণ্ডরুইগড়। ২০১৮সালে— শ্রীশুভজিৎসিংহগজেন্দ্রমহাপাত্র— খণ্ডরুইগড়ওমেদিনীপুরশহর। Jirna Mandirer Jpurnal Radhavallabh Temple, Khandruigarh (Dantan– 2) Chinmoy Das The place mentioned in the Ain-i-Akbari as ‘Tarkol Mahal’ […]
Read More
সুলতানপুর লক্ষীজনার্দন মন্দির Sultanpur Laxmijanardan Temple
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল ব্লকের অন্তর্গত সুলতানপুর গ্রামে একটি অতি প্রাচীন লক্ষ্মী জনার্দন মন্দির আছে। পঞ্চরত্ন মন্দিরটি পূর্বমুখী। কার্নিশের নিচে একটি প্রতিষ্টা ফলক থেকে জানা যায় মন্দিরটি ১২১৫ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ ১৮০৮ সালে নির্মিত হয়েছিল। মন্দিরের সম্মুখভাগের কার্নিশ থেকে পাদপিঠ পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় প্রচুর টেরাকোটা ফলকের উপস্থিতি আছে। দশাবতার কৃষ্ণ লীলার নানা রকম কাহিনী এই ফলক […]
Read More
নবগ্রাম গোপাল ও সিংহবাহিনী মন্দির Nabagram Gopal& Singhabahini Temple
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল থানায় নবগ্রাম গ্রামে মেদিনীপুর শহরের অতি প্রাচীন এক পুরাকীর্তি আছে। পূর্বমুখী সিংহ বাহিনীর এই পঞ্চরত্ন মন্দিরটি অত্যন্ত সুন্দর একটি স্থাপত্য। বর্তমানে ধ্বংসের মুখে পড়ে আছে। ত্রিখিলান যুক্ত প্রবেশপথের ওপর দিকে কার্নিশের নিচে এবং দুপাশের থাম জুড়ে প্রচুর টেরাকোটা সম্বলিত ফলক অবস্থান করছে। প্রচুর ফলক নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও যা এখানে আছে […]
Read More
লছিপুর রাসমঞ্চ Lachipur Rasmancha
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমা লছিপুর গ্রামে বাগেদের বেশ কিছু পুরাকীর্তি এখনো দেখতে পাওয়া যায়। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় এই মন্দিরগুলি এখানে গড়ে ওঠে। একটি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত শ্রীধর বিষ্ণু (মূল বিগ্রহ শলগ্রাম শিলা এখনো উজিত হয়) মন্দিরের সামনে আটকোনা নবরত্ন একটি রাসমঞ্চ আছে। রাসমঞ্চের প্রতিটি জায়গাতেই বেশ কিছু টেরাকোটার কাজ লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকটি দ্বারের […]
Read More
খড়ার জোড়া শিবমন্দির Kharar Twin Shib Temple
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার খড়ার পৌরসভার মধ্যে মাঝি পাড়ায় যে মন্দিরগুলি গড়ে উঠেছে তার মধ্যে সীতা রামের ১৩ রত্ন মন্দিরটি উল্লেখযোগ্য। এই মন্দিরের পাশেই দুটি শিব মন্দির আছে। শশীশেখর এবং মৃত্যুঞ্জয় শিবের মন্দির দুটি আটচালা। মন্দির দুটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এর প্রতিষ্ঠা লিপি গুলি থেকে কবে কে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং প্রতিষ্ঠার কারিগর কারা ছিলেন […]
Read More
খড়ার সীতারাম মন্দির Kharar Sita Ram Temple
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমায় খড়ার পৌরসভার অন্তর্গত মাঝি পাড়ায় একটি ত্রয়োদশ রত্ন মন্দির আছে। এধরনের মন্দির বাংলায় খুব কমই আছে। প্রচলিত রত্ন মন্দিরের ধারাতেই এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ তিনটি ছাদের প্রতিটিতে চারটি করে মোট বারোটি এবং একটি কেন্দ্রীয় চূড়াসহ মন্দিরটি গড়ে উঠেছে। সামনে ত্রিখিলান যুক্ত প্রবেশপথ। গর্ভ গৃহে প্রবেশের দরজার দুপাশে দুটি পোড়ামাটির […]
Read More
ঈশ্বরপুর শ্রীধরজিউ মন্দির Iswarpur Sridharjiu Temple
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার অন্তর্গত ঈশ্বরপুর গ্রামে একটি বিশিষ্ট রীতির পুরাকীর্তি আছে। একটি ছোট দালান মন্দির বা চাঁদনীর ওপরে ছাদে পঞ্চরত্ন বিশিষ্ট স্থাপত্যর হয়েছে। পূর্বমুখী মন্দিরটি শ্রীধর বিষ্ণুর মন্দির। মন্দিরের গর্ভ গৃহে প্রবেশদ্বারের দুপাশে প্রমাণ আকারের দুটি দ্বারপাল মূর্তি রয়েছে। পাশের দেওয়ালে অর্ধ উন্মুক্ত দরজায় নারী মূর্তি ছাড়াও দরজায় দ্বারপাল মূর্তি লক্ষণীয়। ছাদের উপরে পঞ্চরত্নের […]
Read More
দন্দিপুর রঘুনাথজীউ মন্দির Dandipur RaghunathJiu
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল থানার দন্দীপুর গ্রামে একটি খুব সুন্দর পোড়ামাটির টেরাকোটা ফলক চিত্রিত মন্দির আছে। দক্ষিণ মুখী এই পঞ্চরত্ন মন্দিরটি এলাকার একটি উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি। মন্দিরের উপাস্য দেবতা রঘুনাথজীউ। এছাড়াও শ্রীদাম এবং গোপালের মূর্তি এখানে আছে। মন্দিরের সম্মুখভাগ প্রায় সবটাই টেরাকোটা ফলকে আচ্ছাদিত। ত্রিখিলান মন্দিরের শীর্ষে রাম রাবণের যুদ্ধ, কৃষ্ণ লীলা, বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী উৎকীর্ণ […]
Read More
দলপতিপুর শ্রীধরজীউ Dalapatipur Sridhar Jiu
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল থানার অন্তর্গত খড়ার পৌরসভার দলপতিপুর গ্রামে একটি পঞ্চরত্ন মন্দির রয়েছে। পূর্বমুখী এই মন্দিরটি একটি উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি। এখানে বিষ্ণু শ্রীধরজীউ রূপে পূজিত হন। ত্রিখিলান যুক্ত মন্দিরের ধনুকাকৃতি উপরের অংশে বেশ কিছু টেরাকোটা ফলক এখনো আছে। রাম রাবণের যুদ্ধ , কৃষ্ণ লীলা এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। খিলান গুলির ধারে স্তম্ভের মধ্যেও কিছু টেরাকোটা […]
Read More
রাজরাজেশ্বরী দধিমাধব Rajrajeswari Dadhimadhab
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার অন্তর্গত কিশোর নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোস পাড়ায় একটি পঞ্চরত্ন মন্দির অবস্থান করছে। রাজরাজেশ্বরী এবং দধিমাধব এই বিগ্রহ এখানে পূজিত হন। ইটের তৈরি এই মন্দিরটির সামনে একটি চার চালা পলকাটা তুলসী মঞ্চ আছে। Pancharatna temple is located at Bose Para in Kishore Nagar Gram Panchayat under Daspur police station of Paschim […]
Read More